ফেনী সরকারি কলেজে শিক্ষক সংকট এখন চরমে। বিশেষ করে ইংরেজি, বাংলা, আইসিটি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অবস্থা খুবই খারাপ। আইসিটিতে প্রভাষক ছাড়া সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক পদ নেই। আবার ফিন্যান্স, মার্কেটিং ইত্যাদি বিষয়ে পদ সৃষ্টি করা হয়নি।
জানা যায়, আগের স্টাফিং প্যাটার্ন বিদ্যমান থাকায় শিক্ষকের পদ না বাড়লেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। সংকট কাটাতে কয়েকটি বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কিছু সময়ের জন্য শিক্ষক সংযুক্তি দেয়া হয়। কিন্তু সেটি যথেষ্ট নয়।
এ ছাড়া পদ না থাকায় অনেক বিষয়ের পাঠদান করাতে হচ্ছে অন্য বিভাগের শিক্ষকদের। শিক্ষকের পদ সৃজন না হওয়ায় জোড়াতালি দিয়ে চলছে সরকারি এ কলেজটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ফেনী সরকারি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও ডিগ্রি মিলিয়ে মোট প্রায় ২২ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন।
অথচ এর বিপরীতে ২৫০ শিক্ষকের চাহিদা থাকলেও অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ শিক্ষক পদ রয়েছে মাত্র ৮৯টি। শূন্যপদ বাদ দিলে কর্মরত স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন ৭২ জন। অর্থাৎ ৩০০’র বেশি শিক্ষার্থীর জন্য রয়েছেন শিক্ষক মাত্র একজন।
কলেজের কিছু বিভাগের অবস্থা আরও করুণ। এর মধ্যে ইংরেজি শিক্ষকের চার পদের মধ্যে আছেন তিনজন। মেজর ও নন-মেজর হিসেবে সব স্তরেই ইংরেজি পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। সে হিসেবে এ বিষয়ে একজন শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থী সাত হাজারেরও বেশি।
অন্যদিকে কলেজে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়টি পড়ছেন বিভিন্ন স্তরের সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষার্থী। কিন্তু আইসিটির শিক্ষকের পদ সৃষ্টি না হওয়ায় একজন সংযুক্ত ও অভ্যন্তরীণ তিনজন শিক্ষক দিয়ে কোনোরকম চালিয়ে নেয়া হচ্ছে এ বিষয়টি।
অর্থনীতি বিভাগে ১১ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য শিক্ষক পদ রয়েছে মাত্র ছয়টি। ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিষয়ে দুই হাজার করে শিক্ষার্থী থাকলেও এখন পর্যন্ত শিক্ষকের কোনো পদই সৃষ্টি হয়নি।
তাছাড়া শিক্ষক না থাকায় গত বছর কলেজটির পরিসংখ্যান বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তিই বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞান শাখার বিষয়গুলোর জন্য ডেমোনেস্ট্রেটর বাধ্যতামূলক হলেও ওই পদে নেই কেউ। যে কারণে ল্যাবও পরিচালনা করতে হচ্ছে শিক্ষকদের।
ফেনী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোক্তার হোসেইন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সব বিভাগেই শিক্ষক সংকট রয়েছে। এজন্য আরও ১৭৮টি শিক্ষকের নতুন পদ সৃষ্টির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ওই পদগুলো অনুমোদন না হওয়ায় কলেজের পাঠদান চালিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন শিক্ষকরা।
তবুও কর্মরত সব শিক্ষকই অত্যন্ত আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। শিক্ষার্থীদের পাঠদানের বিষয়টি বিবেচনা করে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চান তিনি।
টিএইচ